[email protected] রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
১৪ পৌষ ১৪৩২

মানুষকে মূল্যায়নের যে মাপমাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে হাদিসে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ৭:৪১ এএম

ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের মর্যাদা নির্ধারিত হয় তার বাহ্যিক অবয়ব,

সামাজিক পরিচিতি কিংবা সম্পদের পরিমাণ দিয়ে নয়। বরং মানুষের অন্তরের অবস্থা ও তার কাজই আল্লাহ তায়ালার কাছে মূল বিবেচ্য বিষয়। এই শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজকে আত্মসমালোচনামুখী এবং নৈতিকভাবে দায়িত্বশীল হতে উদ্বুদ্ধ করে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে বলেন—
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তার চেহারা বা ধন-সম্পদের মাধ্যমে দেখেন না; তিনি লক্ষ্য করেন মানুষের অন্তর ও কর্ম। (সহিহ মুসলিম)

এই বাণী আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে নতুন করে ভাবতে শেখায়।

ভুল মূল্যায়নের প্রবণতা

মানুষ স্বভাবতই অন্যকে বিচার করে। কিন্তু যখন সেই বিচার বাহ্যিক ও অনিয়ন্ত্রিত বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, তখন তা অবিচার ও বিভ্রান্তির জন্ম দেয়। অনেক সময় কাউকে তার আয়, পদমর্যাদা, পোশাক বা বসবাসের ধরন দেখে মূল্যায়ন করা হয়। আবার গায়ের রং, ভাষা, বয়স কিংবা জন্মপরিচয়ের মতো বিষয় দিয়েও মানুষকে ছোট বা বড় করা হয়।

অথচ এসব বিষয়ের অধিকাংশই মানুষের হাতে থাকে না। তাই এসবকে ভিত্তি করে কাউকে মূল্যায়ন করা ন্যায়সংগত নয়।

সিদ্ধান্ত ও আমলই আসল পরিচয়

মানুষের আসল পরিচয় তৈরি হয় তার বিশ্বাস, নৈতিক অবস্থান ও সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। কীভাবে জীবন পরিচালনা করব, কোন মূল্যবোধ আঁকড়ে ধরব, সময় ও সম্পদ কোথায় ব্যয় করব—এসবই আমাদের সচেতন পছন্দের ফল।

সততা অবলম্বন করা, অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়ানো, রাগ সংযত রাখা কিংবা অন্যায় থেকে দূরে থাকা—এই সব আমল মানুষের ভেতরের অবস্থাকেই প্রকাশ করে।

বিচার নয়, আত্মসচেতনতা

ইসলাম মানুষকে অন্যকে তুচ্ছ করার অনুমতি দেয় না। বরং শিক্ষা দেয় নিজের আমল ও নিয়ত যাচাই করতে। কারও বাহ্যিক অবস্থান দেখে তাকে বিচার না করে তার চরিত্র ও আচরণ বোঝার চেষ্টা করাই ইসলামের আদর্শ।

আল্লাহর কাছে মানুষের মর্যাদা নির্ধারিত হয় তার অন্তরের নিয়ত এবং সেই নিয়ত থেকে উৎসারিত কাজের মাধ্যমে। বাহ্যিক চাকচিক্য নয়, বরং নৈতিক সিদ্ধান্ত ও সৎ কর্মই মানুষের প্রকৃত সম্মান নির্ধারণ করে।

 

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর