[email protected] রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
১৩ পৌষ ১৪৩২

কাতারে বাঙালি নেতৃত্বে আল-মনসুর প্লাজা — বাংলাদেশিদের আস্থা, স্বস্তির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা

এম. এ. রনী

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৪০ পিএম

দোহা- কাতার: মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আধুনিক ও দ্রুত বর্ধনশীল পর্যটন নগরী কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থিত আল-মনসুর প্লাজা হোটেল বর্তমানে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের পর্যটক, প্রবাসী কর্মজীবী ও ব্যবসায়িক ভ্রমণকারীদের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য ও পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে।

আন্তর্জাতিক মানের সেবা, মানবিক ব্যবস্থাপনা, ভাষাগত সহায়তা এবং কৌশলগত অবস্থানের কারণে হোটেলটি বিশেষ করে বাংলাদেশিদের কাছে আলাদা আস্থার প্রতীক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

চার তারকা মানের এই হোটেলটি অতিথিদের আরামদায়ক অবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি সেবার মান ও খরচের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে। ফলে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি অবস্থান—উভয় ক্ষেত্রেই আল-মনসুর প্লাজা হয়ে উঠছে একটি আদর্শ পছন্দ।

বাংলাদেশি নেতৃত্বে আস্থার ব্যবস্থাপনা আল মনসুর প্লাজা হোটেল। হোটেলটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন বাংলাদেশের ফেনী জেলার সুদর্শন ছেলে নূর মোহাম্মদ নাজিম, যিনি বর্তমানে ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পেশাদারিত্ব, মানবিক আচরণ, শৃঙ্খলাপূর্ণ নেতৃত্ব এবং অতিথিবান্ধব মনোভাবের মাধ্যমে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই অতিথি, সহকর্মী ও হোটেল কর্তৃপক্ষের পূর্ণ আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।

বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে আগত পর্যটক ও প্রবাসীদের জন্য তিনি হয়ে উঠেছেন একজন নির্ভরযোগ্য অভিভাবকের মতো। ভাষাগত সমস্যা, যাতায়াত, খাবার কিংবা প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা—সব ক্ষেত্রেই তার সহযোগিতামূলক মনোভাব বাংলাদেশিদের স্বস্তি এনে দিচ্ছে।

বাংলাদেশির সম্মিলিত দক্ষতায় সেবার উৎকর্ষ আল-মনসুর। আল-মনসুর প্লাজা হোটেলে বর্তমানে মোট ১৩ জন বাংলাদেশি কর্মী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের পেশাদারিত্ব ও টিমওয়ার্ক হোটেলের সেবার মানকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

রিসেপশন বিভাগে কর্মরত আছেন ৩ জন বাংলাদেশি। এই বিভাগের সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাকসুদুর আলম। অতিথি অভ্যর্থনা, ফ্রন্ট ডেস্ক ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ সমন্বয় এবং সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানে তার ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে।

মেইনটেন্যান্স বিভাগে কর্মরত রয়েছেন ২ জন বাংলাদেশি কর্মী, যারা হোটেলের অবকাঠামো, প্রযুক্তিগত রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন।

হাউজকিপিং বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন ৮ জন বাংলাদেশি কর্মী। এই বিভাগের সুপারভাইজার হিসেবে আছেন মো. মাহবুবুর রহমান, যিনি হোটেলের পরিচ্ছন্নতা, শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।

এই দক্ষ ও সমন্বিত টিমওয়ার্কের ফলেই হোটেলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অতিথি সেবা এবং অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় একটি ইতিবাচক ও পেশাদার পরিবেশ গড়ে উঠেছে।

আল-মনসুর প্লাজা একটি ফোর স্টার মানের হোটেল হলেও অতিথিদের সার্বিক স্বার্থ বিবেচনায় রেখে অনেক সময় সাশ্রয়ী অতিথিবান্ধব রেট নির্ধারণ করা হয়। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানকারী প্রবাসী বাংলাদেশি, মধ্যম আয়ের পর্যটক এবং সাধারণ ভ্রমণকারীদের কথা মাথায় রেখে এই মূল্যনীতি গ্রহণ করা হয়।

এর ফলে তুলনামূলক কম খরচে চার তারকা মানের সেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন অতিথিরা, যা হোটেলটির প্রতি আস্থা ও জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়িয়ে তুলছে।

দোহা মিউনিসিপালিটির সামনে, বাংলাদেশিদের জন্য আদর্শ অবস্থান। অবস্থানগত দিক থেকেও আল-মনসুর প্লাজা হোটেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। হোটেলটি দোহা মিউনিসিপালিটির ঠিক সামনেই অবস্থিত, যা বাংলাদেশিদের জন্য কাতারের একটি পরিচিত ও প্রাণবন্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত।

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই এই এলাকা যেন রূপ নেয় এক বাঙালিদের মিলনমেলায়। চারপাশে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য বাংলাদেশি খাবারের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট, যেখানে দেশীয় স্বাদের রান্না সহজেই পাওয়া যায়। এছাড়া কাপড়ের দোকান, ফ্যাশন হাউজ, সেলুন, বেকারি, বাকালা বা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান—সবকিছুতেই বাংলাদেশিদের সক্রিয় উপস্থিতি চোখে পড়ে।

এক কথায় বলা যায়, প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই এলাকায় বাংলাদেশিদের হাতেই গড়ে উঠেছে। ফলে এখানে অবস্থান করলে অনেক সময় মনে হয় যেন নিজের দেশের কোনো গলি বা পরিচিত রাস্তায়ই অবস্থান করছেন।

বিদেশ ভ্রমণে বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি হলো ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু আল-মনসুর প্লাজা হোটেল ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করলে এই সমস্যাটি কার্যত আর থাকে না। হোটেলের ভেতরে এবং আশপাশে প্রায় সব জায়গাতেই বাংলা ভাষায় যোগাযোগ করা সম্ভব, ফলে অতিথিরা নিশ্চিন্তে ও স্বাচ্ছন্দ্যে সময় কাটাতে পারেন।

এছাড়া এই রোডের নিকটেই রয়েছে মসজিদ, মেট্রোরেল স্টেশন, ট্যাক্সি স্ট্যান্ডবাস স্ট্যান্ড—যা যাতায়াতকে করে তোলে আরও সহজ ও সাশ্রয়ী। সব মিলিয়ে আল-মনসুর প্লাজায় অবস্থান আপনার ভ্রমণকে করে তুলবে আরও সহজ, নিরাপদ আনন্দময়

আধুনিক সুযোগ-সুবিধা অতিথি সন্তুষ্টি যেন কৃতজ্ঞতায় ভরা। হোটেলটিতে রয়েছে মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ সহায়তা, ২৪ ঘণ্টা রিসেপশন সার্ভিস, ফ্রি ওয়াই-ফাই, ফিটনেস সেন্টার, সুইমিং পুল, ক্যাফে ও রেস্টুরেন্টসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। অনলাইন রিভিউ অনুযায়ী, অতিথিরা হোটেলের কেন্দ্রীয় অবস্থান, পরিষ্কার পরিবেশ ও সেবার মানের প্রশংসা করেছেন। কিছু সীমিত সমালোচনা থাকলেও, হোটেল ব্যবস্থাপনা সেগুলোকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে নিয়মিত মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

আল-মনসুর প্লাজা হোটেলের অবস্থান হলো-দোহা আল জাদেদা, বি-রিং রোড, জোন-১৫, বিল্ডিং নং-৯৬, স্ট্রিট নং-২২০, দোহা, কাতার। ফোন: +৯৭৪ ৩৩১৮ ০৫০১, +৯৭৪ ৪০৩১ ২৮৮, ইমেইল: [email protected]

 

সব মিলিয়ে বলা যায়, চার তারকা মানের সেবা, সাশ্রয়ী রেট, বাংলাদেশি নেতৃত্ব, দেশীয় পরিবেশ, ভাষাগত স্বস্তি এবং যোগাযোগ সুবিধা—এই সবকিছুর সমন্বয়ে আল-মনসুর প্লাজা হোটেল দোহায় আগত বাংলাদেশিদের জন্য এক আদর্শ আবাসস্থল হয়ে উঠেছে।

প্রবাসে থেকেও যারা নিজের দেশের ছোঁয়া খুঁজে পেতে চান, তাদের কাছে আল-মনসুর প্লাজা শুধু একটি হোটেল নয়—বরং একটি পরিচিত, নিরাপদ ও আস্থার ঠিকানা।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর