আসন বণ্টন নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ নিরসনে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি।
বুধবার প্রথম দিনের বৈঠকে ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটকে একটি করে আসনে ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দেয় দলটি। পাশাপাশি ১২ দলীয় জোটকে আরও একটি আসন দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
অন্য শরিক দলগুলোকেও ভিন্নভাবে মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়েছে বিএনপি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, পিরোজপুর-১ আসনে ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টি (জাফর)-এর চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার এবং নড়াইল-২ আসনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে আসন দেওয়ার বিষয়ে ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), পাঁচ দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরামের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আসন ভাগাভাগি নিয়ে বৈঠক করেছে বিএনপি।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মিত্র দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের জন্য বেশ কয়েকটি আসন আপাতত ফাঁকা রাখা হয়েছে।
একই সঙ্গে কিছু আসনে মিত্র দলের নেতাদের বিপরীতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সমঝোতা হলে একাধিক আসনে প্রার্থী প্রত্যাহারের সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, যেসব ফাঁকা আসনে মিত্র দলের শীর্ষ নেতারা আলোচনায় রয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—
পিরোজপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টি (জাফর)-এর চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার,
বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না,
ঢাকা-১৭ আসনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)-এর চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ,
ঢাকা-১৩ আসনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি,
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক,
কুমিল্লা-৭ আসনে এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ,
পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং
ঝিনাইদহ-২ আসনে দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
এই আসনগুলোতে তাদের মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত বলে জানা গেছে।
এছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি পাবনা-১ (সাঁথিয়া) আসনটি গণফোরাম নেতা ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের জন্য ছেড়ে দিয়েছিল।
এবারও ওই আসনে তিনি আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন। একইভাবে ঢাকা-১২ আসনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং নড়াইল-২ আসনে এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ নির্বাচন করতে আগ্রহী হলেও এসব আসনে বিএনপি ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
যুগপৎ আন্দোলনের বাইরেও আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। দলটিকে চারটি আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ কারণে সম্ভাব্য কয়েকটি আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। যদিও জমিয়ত আরও ছয়টি আসন দাবি করেছে, যেখানে বিএনপি ইতোমধ্যে প্রার্থী দিয়েছে।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রায় নিশ্চিত বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে পারেন—এমন আলোচনা থাকলেও ওই আসনে বিএনপি ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: