নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধে আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী মো. মাসুদুজ্জামান মাসুদ।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরে নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঘেরাও কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘বিভিন্ন পারিপার্শ্বিকতা ও বাস্তবতার কারণে এক পর্যায়ে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলাম। তবে নেতাকর্মীদের ভালোবাসা, আস্থা ও প্রত্যাশা আমাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। এই ভালোবাসা ও বিশ্বাস আমার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। তাই আমি এই মঞ্চ থেকেই ঘোষণা দিচ্ছি— আমি জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়ন পেয়েছি এবং ইনশাআল্লাহ নির্বাচনে অংশ নেব। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তা মেনে নেব।’
এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা উল্লেখ করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি।
তার এই ঘোষণার পরপরই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা টানা কয়েকদিন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভ চলাকালে কয়েকজন নেতাকর্মীকে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্না করতেও দেখা যায়। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে তার বাসভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘেরাওয়ের ঘোষণাও দেন তারা।
ঘেরাও কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে মাসুদুজ্জামান বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া আমার ঘোষণার কারণে জাতীয়তাবাদী দল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সারা দেশের বিএনপির নেতাকর্মীরা কষ্ট পেয়েছেন। এজন্য আমি সবার কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। আমার আগে আমরা, আমাদের আগে দেশ— এই আদর্শকে ধারণ করেই আমি আবার মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপনারা যে ভালোবাসা ও আস্থা আমাকে দিয়েছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আপনারাই আমার পরিবার। আপনারাই আমার নিরাপত্তা। আজ থেকে আর কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। জীবন বাজি রেখে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।’
এ সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, আনোয়ার হোসেন আনু, ফতেহ মো. রেজা রিপন, সাবেক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর যুবদল সভাপতি মনিরুল ইসলাম সজল, কৃষক দলের সভাপতি এনামুল খন্দকার স্বপন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শাখাওয়াতুল ইসলাম রানা, সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজী নুরুদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে খানপুর হাসপাতাল রোডে সমবেত হয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন নেতাকর্মীরা। সেখানে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. আবু আল ইউসুফ খান টিপুসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল চাষাড়া এলাকা প্রদক্ষিণ করে মাসুদুজ্জামানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করে।
এসআর
মন্তব্য করুন: