জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতায় এনসিপিকে কঠিন মূল্য দিতে হবে : সামান্তা শারমিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতায় গেলে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) কঠিন মূল্য দিতে হতে পারে—এমন মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মতামত প্রকাশ করেন।
সামান্তা শারমিন বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক মিত্র নয়। তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ও দর্শনের সঙ্গে কোনো সহযোগিতা বা সমঝোতায় যাওয়া এনসিপির জন্য ভবিষ্যতে বড় রাজনৈতিক মূল্য ডেকে আনতে পারে।”
তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক জোট প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন—‘জুলাইয়ের স্পিরিট’ ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে একমত হলে যে কোনো দল জামায়াতের সঙ্গে জোটে আসতে পারে।
এ প্রসঙ্গে এনসিপির এই নেতা বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির দীর্ঘদিনের অবস্থান অনুযায়ী দলটির মূলনীতি ও রাষ্ট্রকল্প জামায়াতের দর্শন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন তথা ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’-কে কেন্দ্র করে এনসিপির রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়েছে। ফলে এই তিনটি বিষয়ে অভিন্ন অবস্থানই যেকোনো রাজনৈতিক মিত্রতার পূর্বশর্ত।
সামান্তা শারমিন আরও বলেন, তার বর্তমান অবস্থান দলটির গত দেড় বছরের রাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি অভিযোগ করেন, নিম্নকক্ষে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতির দাবি তুলে সংস্কার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার সঙ্গে জামায়াত জড়িত ছিল। সে সময় এনসিপির আহ্বায়ক স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, “যারা সংস্কারের পক্ষে নয়, তাদের সঙ্গে জোটও সম্ভব নয়।”
তিনি জানান, জুলাই পদযাত্রার পর থেকেই এনসিপির পক্ষ থেকে ৩০০ আসনে এককভাবে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা আসে। একই সঙ্গে দলটি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে—এমন বার্তা দিয়ে সারা দেশ থেকে প্রার্থী আহ্বান করা হয়।
সবশেষে সামান্তা শারমিন বলেন, জামায়াতের সঙ্গে জোটের সম্ভাব্য সমস্যাগুলো তুলে ধরা মানেই বিএনপির পক্ষে অবস্থান নেওয়া নয়। বরং বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে এতদিন ধরে এনসিপির যে অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে এবং যা বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে—সেই অবস্থানকেই তিনি সঠিক মনে করেন এবং নিজেকে সেই আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে দেখেন। তার মতে, বিএনপি বা জামায়াত—যেকোনো দলের সঙ্গে জোট গঠন এনসিপির সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক নীতিমালা থেকে বিচ্যুতি সৃষ্টি করবে।