[email protected] রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
১৪ পৌষ ১৪৩২

বিশেষ তদারকির দাবিতে মেটাকে সরকারের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৩৭ পিএম

সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টি ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটাকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ) মেটার কাছে এ চিঠি পাঠায়। চিঠিটি পাঠানো হয় মেটার ভাইস প্রেসিডেন্ট (পাবলিক পলিসি) সাইমন মিলনার, পরিচালক (পাবলিক পলিসি—আঞ্চলিক কার্যালয়) সারিম আজিজ এবং হেড অব হিউম্যান রাইটস পলিসি ফ্রেডেরিক রসকির কাছে।
চিঠিতে বলা হয়, ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহিংসতা উসকে দিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট বানচালের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ধরনের কনটেন্ট দ্রুত শনাক্ত ও অপসারণে মেটার কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।
এনসিএসএ জানায়, বাংলাদেশে মেটার কোনো স্থানীয় কার্যালয় না থাকায় জরুরি নিয়ন্ত্রক ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত যোগাযোগ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এনসিএসএর মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ফেসবুকসহ মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম সহিংসতা উসকানোর কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর গণমাধ্যমে হামলার ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। কিছু পক্ষ ফেসবুকে প্রকাশ্যে এসব ঘটনার সমর্থন জানিয়ে সহিংসতা উসকে দিয়েছে, যার প্রভাব বাস্তব জীবনেও প্রতিফলিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা উসকানিমূলক কনটেন্ট বন্ধে একাধিক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করার অনুরোধ জানানো হলেও মেটা সময়মতো কার্যকর সহযোগিতা করেনি। এ অবস্থায় মেটাকে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত কনটেন্টে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড কঠোরভাবে প্রয়োগ, বাংলা ভাষায় কনটেন্ট মডারেশন ও সেন্টিমেন্ট অ্যানালাইসিস জোরদার এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাড়তি নজরদারি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব শুক্রবার রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বান জানানো যেকোনো পোস্ট সরাসরি রিপোর্ট করা যাবে। জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি শনিবার থেকে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর (০১৩০৮৩৩২৫৯২) ও ই-মেইল ([email protected]) মারফত অভিযোগ গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার নিয়মিতভাবে গুগল, মেটা ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে কনটেন্ট অপসারণের অনুরোধ জানিয়ে থাকে। গুগলের স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের ২৭৯টি অনুরোধে মোট ১ হাজার ২৩টি আইটেম অন্তর্ভুক্ত ছিল, যার মধ্যে ৬৫ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইউটিউব জানিয়েছে, একই সময়ে তারা ৬ লাখ ২১ হাজার ৬৫৫টি ভিডিও সরিয়েছে। অন্যদিকে, মেটার স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৩ হাজার ৭৭১টি অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছিল।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর