মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার (বীর উত্তম) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেন। বিষয়টি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) নিশ্চিত করেছে।
এ কে খন্দকার ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা, বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান এবং একজন দূরদর্শী সামরিক নেতা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিবনগর সরকারের অধীনে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধোত্তর সময়ে তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনী থেকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে ভারতে চলে যান। সেখানে মুজিবনগর সরকারের অধীনে প্রশিক্ষণ ও সামরিক অভিযানের দায়িত্বে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের প্রথম বিমান বাহিনী ইউনিট—‘কিলো ফ্লাইট’, যা সীমিত সামর্থ্য নিয়েও শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক সফল অভিযান পরিচালনা করে।
স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত বাহিনীকে পুনর্গঠিত করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তার নামে ঢাকার কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটির নামকরণ করা হয়েছে।
এ কে খন্দকার ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-২ (বেড়া-সুজানগর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘ সামরিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১১ সালে তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রদান করা হয়।
তার মৃত্যুতে দেশ এক প্রথিতযশা মুক্তিযোদ্ধা, দক্ষ সামরিক সংগঠক ও রাষ্ট্রনিষ্ঠ নেতাকে হারাল।
এসআর
মন্তব্য করুন: