ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদ ও দ্রুত বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে।
উত্তাল হয়ে উঠেছে শাহবাগ মোড়। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, হাদি হত্যার বিচার প্রক্রিয়ার সুস্পষ্ট রূপরেখা ঘোষণা না করা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই শাহবাগ এলাকায় মানুষের জড়ো হওয়া শুরু হয়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনসমাগম ব্যাপক আকার ধারণ করে এবং বিকেলে শাহবাগে শুরু হয় ‘আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশ’।
সমাবেশে নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম। ডাকসুর নেতারা একটি ট্রাকে করে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় কেউ মিছিল নিয়ে, কেউ স্ব উদ্যোগে শাহবাগে এসে আন্দোলনে যোগ দেন। আন্দোলনকারীদের হাতে ছিল বিভিন্ন পতাকা, মুখে ছিল প্রতিবাদী স্লোগান।
‘ফ্যাসিবাদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’,
‘আওয়ামী লীগের আস্তানা এই বাংলায় হবে না’,
‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’,
‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’— এমন নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে শাহবাগ।
সমাবেশে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মুনতাসীর আহমেদ বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের পক্ষে যারা কাজ করছে, তাদের আর বাংলাদেশে একচুলও ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, “আমরা এই শাহবাগ চত্বরকে শহীদ ওসমান হাদি চত্বর হিসেবে ঘোষণা করছি।”
অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান বলেন, “ভারত একটি কুলাঙ্গার রাষ্ট্র। তারা আমাদের দেশের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়।” তিনি হাদি হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করে বলেন, “ড. ইউনূসকে বলব, আপনি ভয় পাবেন না।”
সমাবেশ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে হাদি হত্যার বিচার, হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে দায় স্বীকারের জোর দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর গণসংযোগের উদ্দেশ্যে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার শেষে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ শাহবাগে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এসআর
মন্তব্য করুন: