অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ
ইউনূস জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা প্রদান করছে। পরিবারের মতামত ও ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যা দেশবাসীর জন্য উদ্বেগজনক। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত এবং তার অবদান রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, খালেদা জিয়াকে ইতোমধ্যে রাষ্ট্রের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দেশে চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সরকার একটি অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিরাপত্তা, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রতিটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, নির্বাচনে একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখলেও শত্রু হিসেবে দেখার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।
ভোটাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোট জনগণের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের প্রধান হাতিয়ার। ভোটকেন্দ্রে বাধা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিতে নাগরিকদের অনুরোধ জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, নির্বাচনী পরিবেশ নিরপেক্ষ রাখতে মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে প্রয়োজনীয় রদবদল করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে যোগ্যতা ও পেশাগত দক্ষতার ভিত্তিতে।
তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ’ দেশের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এই সনদের আলোকে প্রস্তাবিত সংস্কার বাস্তবায়নে জনগণের মতামত জানতে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় যোগ করবে।
একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবারের ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি সবাইকে ভোট প্রদানে উৎসাহিত করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো বিপুল সংখ্যক প্রবাসী পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন, যা ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।
বিচার বিভাগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের প্রশাসনিক স্বাধীনতা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে পৃথক সচিবালয় গঠনসহ বিচার বিভাগকে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামোর আওতায় আনা হয়েছে, যা বিচারব্যবস্থা সংস্কারে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
এসআর
মন্তব্য করুন: