সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে সরকার অত্যন্ত সিরিয়াস: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বিগত সময়গুলোতে দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

এবার সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত সিরিয়াস, কারণ দীর্ঘদিন ধরে মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়নি।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ভোলা সরকারি স্কুল মাঠে ভোটের গাড়ি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচন কমিশনকে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। কেউ যাতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনকে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—যদি কোনো ভোটকেন্দ্রে সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে প্রয়োজন হলে সেখানে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিতে হবে।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “প্রত্যেক দলের দায়িত্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষকে ভোটদানে উৎসাহিত করা। সবাই মিলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে হবে।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৯ সালের পর থেকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে জনগণ প্রকৃত অর্থে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, ২০২৪ সালের আগস্টে দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে। সেই আন্দোলনে দেশের তরুণরা জীবন দিয়েছে। তাদের আত্মত্যাগের উদ্দেশ্য ও আকাঙ্ক্ষার আলোকে সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রণয়ন করেছে। এই তালিকাটি প্রথমবারের মতো জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে এবং গণভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের মতামত প্রকাশ করবে।
তিনি বলেন, “আপনাদের যদি আমাদের প্রস্তাবিত পরিবর্তন ভালো লাগে, তাহলে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেবেন, আর যদি ভালো না লাগে, তাহলে ‘না’ ভোট দেবেন। আপনারা কী ধরনের পরিবর্তন চান বা চান না—গণভোটের মাধ্যমেই সেটির প্রতিফলন ঘটবে।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জনগণ পরিবর্তন চাইলেও বা না চাইলেও সেটিই হবে চূড়ান্ত মতামত। পরবর্তীতে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবে, তারা জনগণের মতকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে। কারণ জনগণের ভোটেই তারা নির্বাচিত হবে এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জনগণ যাতে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমান, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কায়সার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বেল্লাল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।