পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় জনাকীর্ণ একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বর্নো প্রদেশে সন্ধ্যার নামাজের সময় সংঘটিত এ হামলায় অন্তত সাতজন নিহত এবং আরও ৩৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ মুখপাত্র নাহুম দাসো।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি হামলার দায় স্বীকার করেনি। এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্নো প্রদেশের রাজধানী মাইদুগুরির গাম্বোরু মার্কেট এলাকার একটি মসজিদে সন্ধ্যায় নামাজ চলাকালে বিস্ফোরণটি ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিস্ফোরণের পরের ভয়াবহ দৃশ্য দেখা যায়—মার্কেট এলাকা ধুলায় ঢেকে যায় এবং আতঙ্কিত মানুষজন এদিক–সেদিক ছুটোছুটি করতে থাকে।
যদিও হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি, তবে এর আগেও এ অঞ্চলে মসজিদ ও জনাকীর্ণ স্থানে আত্মঘাতী হামলা এবং ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
মাইদুগুরি দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম ও তাদের সহযোগী আইএস পশ্চিম আফ্রিকা প্রদেশের (আইএসডব্লিউএপি) তৎপরতার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ২০০৯ সালে বর্নো প্রদেশে ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে বোকো হারামের সশস্ত্র অভিযান শুরু হয়। এরপর থেকে উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।
আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুলিশ মুখপাত্র নাহুম দাসো জানান, বিস্ফোরণের পরপরই বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে শুরুতে সরকারিভাবে হতাহতদের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুনা ইউসুফ এএফপিকে জানান, নিহতের সংখ্যা অন্তত আটজন। অন্যদিকে বাবাকুরা কলো নামে এক স্থানীয় মিলিশিয়া নেতা জানান, নিহত সাতজন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুসা ইউশাউ বলেন, তিনি বহু আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখেছেন।
বিস্ফোরণের সঠিক কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে চলমান এই সহিংসতায় অন্তত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সহিংসতা শুধু নাইজেরিয়াতেই সীমাবদ্ধ নেই; এটি প্রতিবেশী নাইজার, চাদ ও ক্যামেরুনেও ছড়িয়ে পড়েছে।
দীর্ঘদিন সামরিক অভিযান চললেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় আবারও সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একসময় প্রতিদিন গোলাগুলি ও বোমা হামলার খবর পাওয়া মাইদুগুরি শহর গত কয়েক বছরে তুলনামূলকভাবে শান্ত ছিল। ২০২১ সালের পর এটিই সেখানে সবচেয়ে বড় হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
এসআর
মন্তব্য করুন: