[email protected] রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
১৩ পৌষ ১৪৩২

ঢক ঢক করে পানি খান? অভ্যাস বদলালে মিলবে যেসব স্বাস্থ্য উপকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ৪:০৩ পিএম

সংগৃহীত ছবি

পানি ও অন্যান্য পানীয় গ্রহণের অভ্যাস আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

অনেকেই তৃষ্ণা পেলেই একবারে দ্রুত অনেকটা পানি পান করেন, যাকে সাধারণভাবে বলা হয় ‘ঢক ঢক করে পানি খাওয়া’। এতে তাৎক্ষণিকভাবে তৃষ্ণা মিটলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে এই অভ্যাস সবসময় শরীরের জন্য উপকারী নয়।
বরং ধীরে ধীরে বা চুমুক দিয়ে পানি পান করলে শরীর তা ভালোভাবে শোষণ করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য উপকারিতাও বেশি পাওয়া যায়। দ্রুত পানি পানের তুলনায় ধীরে পানি পান করার বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলছে—সেই আলোচনাই তুলে ধরা হলো।
১. পানির সঠিক শোষণ নিশ্চিত হয়
পানি পানের ধরন নির্ধারণ করে শরীর কতটা কার্যকরভাবে তা ব্যবহার করতে পারবে।
ধীরে শোষণের সুবিধা:
দ্রুত অনেকটা পানি পান করলে শরীর সঙ্গে সঙ্গে পুরোটা শোষণ করতে পারে না। ফলে অতিরিক্ত পানি দ্রুত কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাব হয়ে বেরিয়ে যায় এবং প্রকৃত ডিহাইড্রেশন পুরোপুরি কাটে না। অন্যদিকে ধীরে বা চুমুক দিয়ে পানি পান করলে তা পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন ধাপে ভালোভাবে শোষিত হয়।
ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকে:
একবারে বেশি পানি পান করলে রক্তে লবণের ঘনত্ব কমে যেতে পারে। এতে শরীর ভারসাম্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইটসহ অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। ধীরে পানি পান করলে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
২. হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়
ধীরে পানি পান করা হজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
লালার ভূমিকা:
চুমুক দিয়ে পানি পান করার সময় লালা পানির সঙ্গে মিশে যায়। লালা হজমের প্রথম ধাপ হিসেবে কাজ করে এবং পাকস্থলীর অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
অ্যাসিডিটি ও গ্যাস কমে:
খাবারের আগে বা পরে ঢক ঢক করে পানি পান করলে হজমকারী অ্যাসিড পাতলা হয়ে যেতে পারে, যা বদহজমের কারণ হয়। ধীরে পানি পান করলে এই সমস্যা অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।
৩. স্নায়ুতন্ত্রে ইতিবাচক প্রভাব
পানি পানের ধরন মানসিক প্রশান্তির সঙ্গেও সম্পর্কিত।
ভ্যাগাস স্নায়ুর সক্রিয়তা:
ধীরে ও সচেতনভাবে পানি পান করলে ভ্যাগাস স্নায়ু উদ্দীপিত হয়, যা শরীরকে ‘রেস্ট অ্যান্ড ডাইজেস্ট’ অবস্থায় নিয়ে যায়। এতে মানসিক চাপ কমে এবং শরীর স্বস্তি অনুভব করে।
৪. অন্যান্য উপকারিতা
হিক্কা ও ঢেঁকুর কমে: দ্রুত পানি পান করার সময় অতিরিক্ত বাতাস পেটে ঢুকে যেতে পারে। ধীরে পান করলে এই সমস্যা কম হয়।
তৃষ্ণা দীর্ঘসময় মেটে: দ্রুত পানি পান করলে তৃষ্ণা সাময়িকভাবে কমে, কিন্তু ধীরে পান করা পানি শরীরে ভালোভাবে শোষিত হওয়ায় দীর্ঘসময় শরীর আর্দ্র থাকে।
৫. শেষ কথা
পানি যেমন জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য, তেমনি পানি পানের সঠিক পদ্ধতিও সুস্থ থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঢক ঢক করে দ্রুত পানি পান করার বদলে ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পানি পান করলে শরীরের পানিশোষণ ভালো হয়, হজম শক্তিশালী হয় এবং মানসিক চাপও কমে।
সুস্থ থাকতে চাইলে তাই পানি পানের অভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনার দিকেই নজর দিন।

এসআর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর