এক বছরে চট্টগ্রাম নগরীতে সড়কে প্রাণহানি ১৩৭

চট্টগ্রাম নগরীতে ২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ১৩৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

নিহতদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছিলেন পথচারী। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) যৌথ উদ্যোগে প্রণীত ‘চট্টগ্রাম সিটি রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২৫’-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে সিএমপির সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের সহায়তায় পরিচালিত বিগিআরএস (BIGRS) কর্মসূচির আওতায় ২০১৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে।
আট বছরে প্রাণহানি ৬৬২
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আট বছরে চট্টগ্রাম নগরীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৬৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন পথচারীরা— সংখ্যা প্রায় ৩৬৩ জন। পাশাপাশি দুই ও তিন চাকার যানবাহনের চালক ও যাত্রীরাও উচ্চ ঝুঁকিতে ছিলেন।
চিহ্নিত ২০টি উচ্চঝুঁকিপূর্ণ স্থান
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রতিবেদনে নগরীর ২০টি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ত্রুটি শনাক্ত করে তা সমাধানের সুপারিশ করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে—
বড়পোল মোড়
অলংকার মোড়
সিইপিজেড গেট
সিটি গেট
নিউমার্কেট বাসস্টপ
কালামিয়া বাজার বাসস্টপ
সাগরিকা গোলচত্বর
তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনার ওপর জোর
বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংস্থা ভাইটাল স্ট্যাটেজিস-এর সহায়তায় প্রণীত এই সমীক্ষা প্রতিবেদনের মূল তথ্য উপস্থাপন করেন বিআইজিআরএসের সার্ভেইলেন্স কোঅর্ডিনেটর কাজী সাইফুন নেওয়াজ।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) মো. হুমায়ুন কবির-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের ইনিশিয়েটিভ কোঅর্ডিনেটর লাবিব তাজওয়ান উৎসব। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী এবং চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান সোহেল।
রোড সেফটি সেল গঠনের উদ্যোগ
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী জানান, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সিএমপি ইতোমধ্যে একটি রোড সেফটি সেল গঠন করেছে। রোড ক্র্যাশ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এই সেল থেকেই নিয়মিত রোড সেফটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে। এসব প্রতিবেদন নীতিনির্ধারক, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নগর পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য কার্যকর দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।